
আমার এত বছরে লেখা লিখির অভ্যাসটা কোন সময় গড়ে উঠেনি, তাই ঠিক মত গুছিয়ে লিখতে পারি না। তবুও চেষ্টা করছি আরকি, কাকে যেন একবার বলতে শুনেছিলাম “কচু গাছ কাটতে কাটতে নাকি ডাকাত হওয়া যায়”। আপাতত ডাকাত হবার ইচ্ছে নাই। আজ আমার তোলা কিছু ছবি শেয়ার করছি।
চাকরির পাশাপাশি সময় ও মন মেজাজ ভাল থাকলে ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পরি। সেই রকই গতমাসে একদল ফটোগ্রাফারদের সাথে গিয়েছিলাম সিলেটের সিমান্তবতী জেলা সুনামগঞ্জ। হাওর এলাকা বলে বাংলাদেশে সুনামগঞ্জ এর ভালই পরিচিতি আছে। শুনেছি বর্ষা আর গরমের সময় হাওর এলারকার চেহারা নাকি দুই রকম এর হয়। গরমের সময় দেখার ভাগ্য হয় নাই কিন্তু বর্ষার সময়ের হাওর দেখে প্রান জুরিয়ে গেল।
আমারদের বাংলাদেশ আসলেই অনেক সুন্দর। আমরা অনেকে জানিও না যে আমাদের দেশে এত্ত সুন্দর জায়গা আছে।


তিন রাত দুই দিনের ভ্রমনে, দিনে ঘুরে বেরিয়েছি হাওর থেকে হাওরে, আর রাতে এসে থেকেছি হাওরে একবারে মাঝে দীপের মত একটা গ্রাম তাহেরপুরে (Coordinate: 25°05′30″N 91°10′30″E), তাহেরপুরের সাথে বর্ষার সময়ে নৌকা ছাড়া আরকোন যোগাযোগের উপায় নাই। চারিদিকে শুধু পানি আর পানি তার মাঝখানে ছোট্ট একটা গ্রাম।


দিনের বেশীর ভাগ সময় আমাদের কেটেছে ইঞ্জিন চালিত নৌকায়। দেখলাম সুনামগঞ্জের সুনাম টাঙ্গূয়ার হাওর(Coordinate: 25°07'43.15"N 91°06'04.04"E)। সিলেটে ওই দিকটাতে সবসময়ই বৃষ্টি হয় আর আমরা গিয়েছিলাম ভরা বর্ষায়, তো যা হবার তাই হলো কিছুখন পর পর আকাশ ভরা কালো মেখ অতপর ধুমছে বৃষ্টি। মাঝে মাঝে যেটুকু সময় পাচ্ছিলাম সেটুকুই কাজে লাগাচ্ছিলাম ছবি তোলার জন্য।
ঢেউএর তালে তালে আমরা যাচ্ছি মহিষখোলা দেখতে। একপাশে কাছাকাছি গ্রামকে দেখা যাচ্ছিল দুরদিগন্তের একটা রেখার মত। আর একপাশে তাকাতে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। বিশাল বিশাল পাহারের সারি কিন্তু ওটা আমাদের নয়, দুর থেকে দেখার অনুমতি আছে কিন্তু ধরে দেখার অণুমতি নাই।
মহিষখোলাতে নেমে কিছু লাইফস্টাইলের ছবি তুল্ললাম। আমারা যে অন্য জায়গার তা আমাদের দেখলেই বোজা জায়, তাই একটা প্রশ্নই আসছিল “ভাই আফনেরা কই থেকে আইছেন?”। ঊত্তর একটাই “ভাই ঢাকা থেকে এসেছি”। আমাদের উত্তরটা শুনে সবারই চোখ একটু বড় হয়ে যাচ্ছিল, পরে বুজলাম ঢাকা ওদের জন্য বিদেশ। সিলেটেই যায় কদাচিৎ।



মহোনপুর সিমান্তফরী (Coordinate: 25°09'49.25"N 90°58'41.13"E) থেকে মাত্র ১০মিনিট হাটলেই ভারত। ভারতের মেঘে ঢাকা পাহার গুলোদেখে মনটা খারাপ হয়ে গেল। এত্ত সুন্দর জায়গা আর আমরা যেতে পারছি না। শুধুই দূর থেকে তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কিবা করার আছে।

এক সময় ফিরে এলাম ঢাকাতে আবার সেই যান্ত্রিক জীবনে, কিন্তু মনে আবার ঠিক করলাম যদি আল্লাহ সুযোগ দেয় আবার হয়তো দেখতে আসবো সিলেটের হাওর।
No comments:
Post a Comment